Friday, April 11, 2025
Friday, April 11, 2025
Homeবিশেষ প্রতিবেদনসুমন রাফির সহযোগিতায় প্রতিবন্ধী যুবক আবুল হোসেনের কর্মসংস্থান

সুমন রাফির সহযোগিতায় প্রতিবন্ধী যুবক আবুল হোসেনের কর্মসংস্থান

মুকুল বসু বোয়ালমারী প্রতিনিধি :

মো. আবুল হোসেনের বয়স যখন এক বছর তখন সে প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়। অনেকদিনের চিকিৎসার পরে জ্বর থেকে মুক্তি মিললেও ঠেকানো যায়নি তার শারীরিক প্রতিবন্ধীতা। চাহিদা সম্পন্ন যুবক আবুল হোসেনের উচ্চতা দেড় ফুটের বেশি না। তার দুই হাত আর দুই পা রোগে সরু হয়ে গেছে। হাত-পায়ে জোর নেই। কোন কাজ করতে পারে না। ধারণা করা হয় যথাযথ চিকিৎসা না হওয়ায় ওষুধের প্রভাব কিংবা রোগের তীব্রতার কারণে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে শারীরিক প্রতিবন্ধীতা দেখা দিয়েছে। সঙ্গত কারণেই শিক্ষার্জনও সম্ভব হয়নি। এরপর কেটে গেছে আরো ৩৪ বছর। হতাশা, যন্ত্রণা আর সংগ্রামকে সাথী করে দীর্ঘ এ সময়ে প্রাণান্ত চেষ্টা চলেছে প্রতিবন্ধীতাকে জয় করার। মো. আবুল হোসেনের বয়স এখন ৩৫ বছর। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলা ঘোষপুর ইউনিয়নের ভাড়ালিয়ারচর গ্রামে। বাবা ছত্তার বিশ্বাস এখন বেঁচে নেই। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবুল হোসেন ছোট। বড় ভাই তার সংসার নিয়ে পৃথক থাকেন। মাকে নিয়ে আবুল হোসেনের কষ্টের সংসার। আবুল হোসেনের উপার্জনেই চলে টানাটানির সংসার। উপার্জন বলতে সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতা নিয়ে কোন রকম একটা ঘরে টিকে থাকা আর কি! শারীরিক প্রতিবন্ধীতার কারণে সম্মানজনক কোন পেশায় থেকে জীবিকার্জনেরও নেই কোন সুযোগ। তারপরও সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার তাগিদে একটা পর্যায়ে গত এক বছর ধরে দুধের ব্যবসা করছেন। একটা ভ্যান ভাড়া করে ভ্যানের উপর আবুল হোসেন বসে থাকে আর ভ্যানওয়ালা দুধ বিক্রি করে টাকা তাকে (আবুল হোসেন) বুঝিয়ে দেয়। দুধ কিনে দুধ বিক্রি করে যা লাভ হয় তা থেকে ভ্যানওয়ালাকে ভ্যান ভাড়া দিতে হয়। এরপর যা থাকে তা দিয়ে চলে মা-ছেলের অভাবের সংসার। বিষয়টি জানতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এলাকায় মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত রক্তযোদ্ধা সুমন রাফি। তিনি আবুল হোসেনের বাড়ি গিয়ে ৮০ কেজি দুধ এবং দুধ বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি (কলসি, দুধ ঢালার ফানেল ইত্যাদি) কিনে দেন। আবুল হোসেন বলেন, ৮০ কেজি দুধের টাকা দিয়েছে সুমন রাফি ভাই। আশা করছি, এখন দুধ বিক্রির লাভের টাকায় সম্মানজনকভাবে ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবো। এ ব্যাপারে সুমন রাফি বলেন, বিভিন্ন লোকমুখে আবুল হোসেনের খবর পেলে আমি তার বাড়ি ছুটে যাই। তার অসহায় অবস্থা দেখে তার কর্মসংস্থানের জন্য তাকে আমি ৮০ কেজি দুধ ও দুধ বিক্রির সরঞ্জামাদির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দিয়েছি। এতে তার আর্থিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: