Friday, April 11, 2025
Friday, April 11, 2025
Homeআইন আদালতফরিদপুরে রিকশা চালকের লাশ উদ্ধার।

ফরিদপুরে রিকশা চালকের লাশ উদ্ধার।

ফরিদপুর প্রতিনিধি :

ফরিদপুর সদরে নিখোঁজের চারদিন পর হালিম শেখ (২৫) নামে এক রিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তি শহরের আলিপুর গোরস্থান এলাকার মৃত আব্দুর রব শেখের ছেলে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে হালিম ছিল মেজো। গতকাল শনিবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের চুনাঘাটা মডেল টাউন এলাকার নিহত হালিমের বন্ধুর ভাড়া বাসা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হালিমের বন্ধু রনি মোল্যার (২৫) স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস.) শৈলেন চাকমা, কোতয়ালী থানার ওসি মো. আসাউদজ্জামানসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা।

নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় হালিম শেখ। নিখোঁজের আগে ওইদিন রনির মোল্যার সাথে হালিমকে ঘুরতে দেখেছিল স্থানীয়রা। শুক্রবার কোতয়ালি থানায় হালিমের নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরী করে পরিবারের সদস্যরা। আজ শনিবার সকালে হালিমের পরিবারের লোকজন শহরের চুনাঘাটা মডেল টাউনের মো. মোখলেসুর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া রনির বাসায় গিয়ে ভিতর থেকে গেট আটকানো দেখতে পায় তারা। একপর্যায়ে গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে দোচলা টিনের ঘরের ভিতর হালিমের রিকশাটি দেখতে পান নিহত হালিমের স্বজনরা। এছাড়া ঘরের পেছনে বালি—মাটি দিয়ে কিছু ঢেকে রাখা দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান তারা। কোতয়ালী থানা পুলিশ শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখা প্লাষ্টিকের বস্তা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় হালিমের মৃতদেহটি উদ্ধার করে।

জানা যায়, রনি মোল্যা নরসিংদি জেলার রায়পুর এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে। মাত্র দেড় মাস আগে সে ফরিদপুর শহরের চুনাঘাটা এলাকার ভাড়া বাড়িতে উঠে। স্থানীয়দের সন্দেহের বিষয়টি বুঝতে পেরে সকালেই রনি স্ত্রীকে রেখে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। একটি রিকশা চুরির লোভে হালিম শেখকে তার বন্ধু হত্যা করে ঘরের পেছনে মাটির নিচে পুতে রাখে।

হালিমের রিকশার মালিক নূর ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হালিম তাকে ফোনে জানায় সে রাতে গ্যারেজে যাবেনা, এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে গেছে। পরেরদিন ফিরবে। আমরা জানতে পারি হালিমের বন্ধু রনি মোল্যা তাকে ভাড়া করে নিয়ে যায়। পরে রনির বাড়িতে এসেই তার লাশ দেখতে পেলাম।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর একসাথে ওয়াজ শুনে রিকশা চালক হালিম তার বন্ধু রনির সাথে চুনাঘাটার বাসায় যায়। এরপর থেকে তার সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করে তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর হালিমের স্বজনদের সন্দেহের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হালিমের লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, মরদেহের ঘাড়ে কোপের চিহ্ন রয়েছে। সম্ভবত তাকে কুপিয়ে হত্যার পরে এখানে পুঁতে রাখা হয়। শিঘ্রই রনিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।

কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জিজ্ঞাসাবাদদার জন্য মূল সন্দেহভাজন রনির স্ত্রীকে ঘটনাস্থল থেকে থানায় আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, একদিন আগেই একই এলাকা থেকে হুসাইন নামের ১৩ বছরের এক রিকশা চালকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া আমিনুর রহমান নামে আরো এক রিকশা চালক গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখেঁাজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: