Monday, April 7, 2025
Monday, April 7, 2025
Homeবিনোদনঈদ আনন্দে তিস্তা পাড়ে সমুদ্রের তীরের সৈকতের ছোঁয়া।

ঈদ আনন্দে তিস্তা পাড়ে সমুদ্রের তীরের সৈকতের ছোঁয়া।

মো: জাহিদুল ইসলাম, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি।

ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে তীব্র তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে তিস্তা ব্যারাজে নেমেছে মানুষের ঢল। ঈদের নামাজ শেষ হতেই প্রথম দিন থেকে তিস্তা ব্যারাজে মানুষের সমাগমে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। উৎসব আর আনন্দে মেতে উঠেছে পুরো তিস্তা ব্যারাজ এলাকা।

সেখানে ছুটে চলছে পালতোলা নৌকা সহ স্পিডবোট এতেই দেশের সর্ববৃহৎ ডালিয়াস্থ তিস্তা ব্যারাজে মানুষে মানুষে ভরপুর। এ যেন সমুদ্রের তীরের সৈকতের ছোঁয়া রীতিমত সেখানে গ্রামীন মেলা বসেছে।নানা রকম পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো। বিভিন্ন খেলনা, বাঁশি, বেলুন, মাটির গাড়ি ও খাবারের দোকান।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সরেজমিনে গেলে দেখা যায় মানুষজনকে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে উৎসব আর আনন্দে মেতে উঠেছে পুরো তিস্তা ব্যারাজ এলাকা। পর্যটকদের উৎসাহিত করতে ডালিয়া এলাকায় তিস্তার বুকে ১২টির বেশি স্পিটবোট চলছে। এগুলো দ্রুত বেগে এ পাশ থেকে ওপাশে ছুটে চলছে পর্যটকদের নিয়ে। স্পিডবোট ও পালতোলা নৌকায় মাত্র ৬০ টাকায় তিস্তার ঢেউ খেলানো বুকে ভাসছেন দর্শনার্থীরা। এতে সব বয়সী মানুষ হৈ-হুল্লোড়ে মেতে উঠছেন। নদীর পানি বড় বড় ঢেউ এসে ধাক্কা দিচ্ছে তিস্তার কোলে। ছিটকে আসা জলরাশির আনন্দে মেতে উঠছে সবাই।

ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, ঈদ আনন্দে প্রতি বছর এই তিস্তা ব্যারেজে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। বছরে দুই দিনে পরিবার পরিজন নিয়ে এই ব্যারেজে ঘুরতে আসি। অনেক আনন্দ উপভোগ করি। এই জায়গাটি পর্যটন এলাকা ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। দর্শনার্থী আসিফ বলেন, ঈদের দীর্ঘ ছুটি থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে তিস্তা ব্যারেজে এসেছি। তিস্তা ব্যারেজে স্পিডবোটে উঠে আরও আনন্দ লাগছে। এ সময় তিস্তা ব্যারাজে আনন্দের স্মৃতির হিসেবে ফ্রেমবন্দি করছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।

ঘুরতে আসা দর্শনার্থী রাজিয়া আক্তার বলেন, প্রতি বছর ঈদ ও নানান উৎসবে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় ছুটে আসি। রাজধানীতে বন্দী জীবনের পর ঈদে গ্রামে এলে আমি আমার ছেলেমেয়েদের নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি। এখানে এসে অনেক মজা করেছি যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এটাই আমাদের কাছে প্রকৃতির বড় বিনোদনের আস্থা। আরেক দর্শনার্থী মোস্তাফ বলেন, আমরা ঢাকা শহরে গন্ডির মধ্যে বসবাস করি। কোথাও প্রকৃতির বিনোদনে যেতে পারি না। তাই ঈদে সন্তানদের নিয়ে তিস্তা ব্যারেজে ছুটে আসছি। এতে বাচ্চারা অনেক আনন্দ পাচ্ছে। এখানে বিশাল এলাকা জুড়ে মেলার মতো দোকান বসেছে। খাবার দোকান রয়েছে। সব মিলে সারা দিন ভাল কাটছে।

তিস্তায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী সাবরিনা ইয়াসমিন বলেন, “প্রতি বছর ঈদে এবং নানা উৎসবে আমরা পরিবার নিয়ে তিস্তা এলাকায় আসি। এখানে এসে আমরা অনেক মজা করেছি, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।রংপুর থেকে আসা শোবন ও মিলা বলেন, “নদীর বুকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া আশির দশকের পালতোলা নৌকাগুলো দেখতে বেশ ভালো লাগছে। এগুলো আমাদের মতো অন্যদেরও নজর আকৃষ্ট করছে, এবং আমরা ক্যামেরায় কিছু মুহূর্ত বন্দি করতে পেরেছি। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা থেকে আসা সুজন ইসলাম ও রনি ইসলাম জানান, তিস্তা ব্যরেজের নাম প্রতিবছর বন্যার সময় পত্রিকায় পড়েন, টিভিতে দেখেন। এবার ঈদের ছুটিতে সরাসরি দেখতে তাঁরা ছুটে এসেছেন। এখানে এসে বেশ ভালো লেগেছে তাঁদের।

আগামী বছর এখানে আবার আসার ইচ্ছা আছে।ঝালমুড়ি-চানাচুর ও আচার বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, ঈদের এই আন্দ উৎসব শনিবার পর্যন্ত চলবে। বাহারি খেলনা বিক্রি করে ভালো ব্যবসা হচ্ছে বলেও জানালেন খেলনা বিক্রেতা সুভাষ চন্দ্র রায়। এখানে ভাতের হোটেল সহ বিভিন্ন মুখোরোচক খাবারের দোকান রয়েছে। ঘুরাঘুরি পাশাপাশি পরিবার পরিজন নিয়ে মানুষজন খাওয়া দাওয়াও সেরে নিচ্ছেন। তিস্তাপাড়ের ঠান্ডা বাতাস যেন চলমান তাপপ্রবাহকে ম্লান করে দেয়।

তিস্তা নদীর ধারে একেবারে গ্রাম্য পরিবেশে হলেও নিরাপত্তা নিয়ে তেমন কোনো ঝুঁক্কি পোহাতে হচ্ছেনা দর্শনার্থীদের। ব্যারেজ এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্য আনারুল ইসলাম বলেন, ঈদের আনন্দ উৎসবে প্রথম দিন এখানে প্রচুর যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও চেষ্টা করেছি ঘুরতে আসা মানুষদের নিরাপত্তা দিতে। পাশাপাশি হাতিবান্ধা ও ডিমলা থানা পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশ প্রতিক্ষন দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক মন্তব্য

%d bloggers like this: